ফাইল ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বানামধন্য লেখক ও শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ৮৫তম জন্মদিন আজ।
অধ্যাপক, উপস্থাপক, সংগঠক, লেখক কিংবা বক্তা–সব পরিচয় ছাপিয়ে দেশজুড়ে সবাই তাকে চেনেন একজন ‘আলোকিত মানুষ’ হিসেবে।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ছোটবেলা কেটেছে পাবনা, টাঙ্গাইল আর বাগেরহাটে। অল্প বয়সেই মাকে হারান। বাবা আযীমুদ্দিন আহমদ একজন শিক্ষক ও সাহিত্যানুরাগী ছিলেন। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন
পড়াশোনা শেষে ১৯৬১ সালে শিক্ষকতাকেই তিনি পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। শিক্ষক হিসেবে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ মুন্সীগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজ, সিলেট মহিলা কলেজ, রাজশাহী কলেজ, ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজ এবং সবশেষে ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। তাঁর শিক্ষক জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা বই ‘নিষ্ফলা মাঠের কৃষক’ বাংলাদেশে শিক্ষামানের দুর্দশার একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল।
শিক্ষকতার পাশাপাশি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সাহিত্য আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ষাটের দশকে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘কণ্ঠস্বর’ পত্রিকাটি সে সময়ের বহু তরুণ কবি-সাহিত্যিককে নতুন চিন্তা, নতুন ধারণা প্রকাশের সুযোগ করে দিয়েছে। সেই সময় থেকেই তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন টেলিভিশনের সঙ্গে। সত্তরের দশকে তিনি হয়ে উঠেছিলেন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় উপস্থাপকদের একজন।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জীবনের এক শ্রেষ্ঠ কীর্তি। নানা বাধা-বিঘ্ন-সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এখন সারাদেশে প্রায় ৩০ লাখ কিশোর-তরুণকে বই পড়া কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত করেছে। এ ছাড়া ঢাকার বাংলামটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মূল ভবনের বিশাল গ্রন্থাগার, প্রদর্শনী কক্ষ, চলচ্চিত্র, গান ও সংগীতের আর্কাইভ বহু সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের মনের খোরাক জুগিয়ে চলেছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার প্রকল্পও মানুষের মাঝে বিস্ময় জাগিয়েছে।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে র্যামন ম্যাগসাসাই পুরস্কার, একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।