ছবি: গ্লোবাল টিভি
সাইফুল ইসলাম আকাশ, শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের নিলয়–সাবিনা দম্পতি বিয়ের অন্যরকম আয়োজননে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। নিজের ইচ্ছাকে বাস্তব রূপ দিতে ইতালি প্রবাসী নিলয় নতুন বউকে ঘরে এনেছেন হেলিকপ্টারে চড়িয়ে।
নিলয় হাসানের (৩১) বাড়ি নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের বাহিরকুশিয়া গ্রামে। মৃত আবুল কাশেম ছৈয়াল ও মৃত আয়েশা বেগম দম্পতির ছেলে তিনি। আর কনে সাবিনা আক্তার (২২) বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার চড়াইল্লাপুর এলাকার সাদেক হাওলাদারের মেয়ে। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা হাজিক্যাম্প সংলগ্ন হলিডে এক্সপ্রেস হোটেলে বিয়ে হয় তাদের। বিয়েতে দুই পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ইতালি থেকে রওনা দিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন নিলয়।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের পন্ডিতসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নবদম্পতিকে নিয়ে হেলিকপ্টার অবতরণ করে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে স্ত্রী সাবিনাকে নিয়ে হেলিকপ্টার থেকে নামেন সদ্য ইতালিফেরত যুবক নিলয় হাসান। এ সময় পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন বর–বধূকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এই ব্যতিক্রমী ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে পণ্ডিতসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে তখন তিল ধারণের জায়গা নেই। এসময় নিরাপত্তায় ছিলেন পুলিশ সদস্যরা।
নিলয়ের বোন সুরমা বেগম বলেন, আমরা দশ ভাই বোন। এর মধ্যে নিলয় সবার ছোট। চৌদ্দ বছর আগে আমার বাবা ও তেরো বছর আগে আমার মা মারা যায়। ছোট ভাই নিলয় আমাদের খুব আদরের। নিলয়ের সখ ছিল বিয়ে করে হেলিকপ্টারে চড়ে গ্রামে বউ নিয়ে আসবে। আমার ভাইয়ের সেই সখ পূরণ হয়েছে। আমরা খুবই খুশি।
ঘড়িসার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুর রব খান বলেন, ইতালি প্রবাসী এই যুবক নিজের ইচ্ছাকে বাস্তব রূপ দিতে দুই ঘণ্টার জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া করেন শুনেছি। তাতে চড়ে নববধূকে নিয়ে আমাদের এলাকায় উড়ে এলেন এই যুবক। এতে ভীষণ খুশি সবাই। তাদের দাম্পত্য জীবন যেন সুখের হয়, তাই দোয়া রইল।
বর নিলয় হাসান বলেন, আমি ১৮ বছর যাবত ইতালি থাকি। আমার অনেক দিনের সখ বিয়ে করে হেলিকপ্টারে চড়ে বউ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসবো। হেলিকপ্টারে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ করে আমার সখ পূরণ করেছি। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
নববধূ সাবিনা আক্তার বলেন, আমি কোন দিনই ভাবিনি, হেলিকপ্টারে শ্বশুরবাড়ি আসবো। হেলিকপ্টারে চড়ে আমার খুবই ভালো লাগছে। স্বাভাবিকভাবেই আমি আপ্লুত। আমাদের দাম্পত্য জীবন যেন সুখের হয়, এটাই আমার চাওয়া।