গ্লোবাল টিভি ছবি
আবদুল হাকিম, বান্দরবান: মাঠ-ঘাট, রাস্তার ধার কিংবা বাড়ির উঠান। বাদ যায়নি বান্দরবানের অলিগলি কিংবা গ্রামগঞ্জ। জেলাজুড়েই বিষবৃক্ষের ছড়াছড়ি। বিভিন্ন তামাক জাত কোম্পানির প্রলোভনে বিষ ফলাচ্ছেন চাষীরা। জীবনঘাতি এই তামাকের আবাদ বন্ধে কার্যকর আইন চাইছে সচেতন মহল।
বান্দরবান জুড়ে তামাক চাষের ফল বাতাসে কমছে অক্সিজেনের মাত্রা, সাথে কঠিন রোগে বাসা বাঁধছে মানুষের শরীরে। এদিকে উজাড় হচ্ছে বনভূমি, রুক্ষ শুষ্ক মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে সবুজ মাঠ। কৃষিবিদরা বলছেন, তামাকে যে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, তাতে উর্বরতা হারাচ্ছে ফসলি জমি। পরিবেশবাদীদের দাবি, এই কীটনাশক পুকুর নদীর পানিতে মিশে ধ্বংস হচ্ছে মাছসহ অন্য জীববৈচিত্র্য।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা জেলার মধ্যে একটি বান্দরবান। আর এ জেলার পরিবেশ ধ্বংসের জন্য দায়ি তামাক চাষ। তামাক চাষের কারণে চাষীরা অজান্তে নিজেরাও পরিবেশের ক্ষতি করছে। অন্যদিকে গাছ কাটা, পাহাড় ও মাটি কাটার ফলেও রক্ষা পাচ্ছে না প্রকৃতি ও পরিবেশ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা জানান, তামাক চাষে যে সব কীটনাশক ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়,তাতে মাটি ও পনির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম মাদকের ট্রানজিট পয়েন্ট হওয়ার কারণে মাদক চাষ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কারণে বান্দরবানের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাদকের দিকে ধাবিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এক্ষেত্রে কৃষক ও তামাক কোম্পানিসহ যারা কাজ করছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা জরুরি মনে করি।
আবাসিক অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো: সাদ্দাম হোসেন বলেন, তামাক চাষ যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, তাহলে নানাবিধ গুরুতর রোগের চিকিৎসা দেয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সেলিম বলছেন, তামাক চাষ ও সেবন শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এসব রক্তনালীর রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। যার কারণে হার্ট ও ব্রেন অ্যাটাকের পাশাপাশি হৃদরোগসহ বিভিন্ন দূরারোগ্যে রোগ হতে পারে।