গ্লোবাল টিভি ছবি
মো.লুুৎফর রহমান, হিলি (দিনাজপুর): দিনাজপুরের বিরামপুর এক প্রসূতির সিজারের সময় পেটের মধ্যে গজ ও ফুল রেখে সেলাই দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ডাঃ মোছাঃ তাহেরা খাতুন লাভলীর বিরুদ্ধে। প্রসূতির বাবা বাদী হয়ে জেলা সিভিল সার্জনের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। পরে ৩ সদস্যে একটি তদন্তের টিম গঠন করেন দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসার ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার এই তিন জনকে তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলা সিভিল সার্জন।
প্রসূতি মাইমুন্না আক্তার মীম (১৮) নবাবগঞ্জ উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামের ইসাহাক আলীর স্ত্রী।
প্রসূতির বাবা মতিয়ার রহমান বলেন, আমার মেয়ের প্রসব ব্যথা উঠলে, গত ৬ মার্চ বিরামপুর রায়হান ক্লিনিকে ভর্তি করি। ডাঃ তাহেরা খাতুন আমার মেয়ের সিজার করেন। ৭ দিন পর সেলাই কাটা হয়। তার ২৭ দিন পর মেয়ের রক্তক্ষরণ শুরু হয়। আবার চলতি মাসের ৩ তারিখে রায়হান ক্লিনিকে ভর্তি করি। ভর্তি করেও কোন মতে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না। শেষে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। ডাক্তাররা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আবার মেয়ে অপারেশন করেন। তখন ডাক্তাররা বলেন, মেয়ের পেটের মধ্যে গজ ও অনেক ময়লা ছিলো। এছাড়াও আপনার মেয়ের জরায়ুতে ইনফেকশন হয়েছিল, তা কেটে ফেলা হয়ে, সে আর মা হতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ের জীবন শেষ। আমি আমার মেয়ের এই ক্ষতির ন্যায্য বিচার চাই। আমি চাই আর কোন মেয়ের যেন এমন সর্বনাশ না হয়।
রায়হান ক্লিনিকের ম্যানেজার মাহবুব আলম বলেন, আমাদের ক্লিনিকে মাইমুন্না আক্তার মীম নামের একজন প্রসূতির সিজার করার কিছু দিন পর ঐ রোগীর রক্তক্ষরণ হয়। সেদিন তাহেরা ম্যাডাম ছিলেন না, দিনাজপুর ছিলেন। শেষে আমাদের ক্লিনিকের এম্বুলেন্স করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ গোলাম রসূল রাখি বলেন, আমি ও দুইজন মেডিকেল অফিসারসহ তিন সদস্যের একটি তদন্তের টিম গঠন করে দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে।
এ বিষয়ে ডাঃ মোছাঃ তাহেরা খাতুন লাভলী বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। তার পেটে কোন গজ বা ফুল রাখা হয়নি। তবে যদি রিপোর্টে আমার ভুল প্রমাণিত হয়, তাহলে আমি আপরাধ মেনে নেবো।