গ্লোবাল টিভি ছবি
দিদারুল আলম জিসান, উখিয়া টেকনাফ (কক্সবাজার): মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাতের ছয় মাস পর আবারও টেকনাফ সীমান্তে মর্টার শেল ও ভারী গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। এ ঘটনা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার থেকে বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইন থেকে থেমে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ টেকনাফের সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ এবং পৌরসভা এলাকায় শোনা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম।
তিনি জানান, টেকনাফের সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ এবং পৌরসভা এলাকায় নতুন করে এক সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে মর্টার শেল ও ভারী গুলির বিকট আওয়াজ আসছে। মর্টার শেলের বিস্ফোরণে এখানকার বাড়ি-ঘর কেঁপে উঠছে। সর্বশেষ বুধবার ভোর রাত পর্যন্ত এই বিকট শব্দে স্থানীয়রা ভীত ছিল। আব্দুস সালাম আরও জানান, এ ঘটনায় নাফনদী পেরিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। তবে সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান জানান, মিয়ানমারের রাখাইনের চলমান যুদ্ধের কারণে টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাতে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ প্রায়ই এপারে শোনা যায়। বিস্ফোরণ হলে বাড়ি-ঘর কেঁপে ওঠে, যা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
টেকনাফ উপজেলার ইউএনও আদনান চৌধুরী জানান, মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘর্ষের সময় বিস্ফোরণ হলে এর শব্দ টেকনাফ সীমান্তে শোনা যায়। তবে এ ঘটনায় ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কারণ এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরের ঘটনা। যদিও রাখাইনের বিস্ফোরণের কারণে টেকনাফ সীমান্তের প্রতিটি গ্রামে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুতে আরাকান আর্মি (এএ) রাখাইন রাজ্য দখল করতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করে। এ যুদ্ধে তারা ঘুমধুম, উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও অন্যান্য সামরিক ক্যাম্পসহ একাধিক গ্রাম ও শহর দখল করে। এখনো রাখাইনের মংডু শহর দখল নিতে লড়াই চলছে।
এছাড়া, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে টেকনাফের নাফনদীতে বাংলাদেশি ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ্য করে একাধিকবার গুলি বর্ষণ করা হয়েছে, তবে কে এই গুলি বর্ষণ করছে তা জানা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি জেলেরা সাগর ও নাফনদীতে মাছ ধরতে ভয় পাচ্ছে এবং টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে।