গ্লোবাল টিভি ছবি
দিদারুল আলম জিসান, উখিয়া টেকনাফ (কক্সবাজার): কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় এক মাসের ব্যবধানে ফের টানা ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও সাগরের জোয়ারের পানি ঢুকে অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের ৩০ হাজার বাসিন্দা।
গত সোমবার থেকে দিবাগত রাত, মঙ্গলবার ও বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দিনভর ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে চারিদিকে থইথই করছে পানি। জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বহু কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙ্গেছে, গ্রামীণ সড়ক লণ্ডভণ্ড, কালভার্ট বিধ্বস্ত, গাছপালা ও পানের বরজ নষ্ট হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার জালিয়া পালং ইউনিয়নের নম্বরী পাড়া, ঘাটঘর পাড়া, পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি, সোনারপাড়া ডেইপাড়া, মনখালি। হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া, রুমখা পালং, বড়বিল, পাতাবাড়ি,নলবুনিয়া,খেওয়া ছড়ি, বৌ বাজার, কুলাল পাড়া, মনির মার্কেট, পাগলির বিল। রাজাপালং ইউনিয়নের উখিয়া সদর, কুতুপালং, মাছকারিয়া, লম্বাশিয়া, তুতুরবিল, হিজলিয়া, পিনজির কুল, হাজিরপাড়া,ডিগলিয়া পালং, সিকদারবিল, বটতলী।রত্নাপালং ইউনিয়নের সাদকাটা ,পশ্চিম রত্না, বড়ুয়াপাড়া, খোন্দকারপাডা, গয়ালমারা ও পালংখালী ইউনিয়নে থাইংখালী, রহমতের বিল, বালুখালী, তৈলখোলা,ফারিবিল, আঞ্জুমান পাড়াসহ বেশকিছু এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন।
নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অনেক গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। চিংড়ি ঘের পানির তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি জলাবদ্ধতা সড়ক ডুবে যাওয়ায় চলাচলেও ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এখনো দুর্গত এলাকায় মানুষের কাছে কোন ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি। ঘর বাড়িতে পানি ডুকে যাওয়ায় অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্র চলে গেছে। এসব দুর্ভোগের বিভিন্ন চিত্রের কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা।
রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, তার এলাকার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। পঞ্চাশটির বেশি বসতবাড়িতে পানি ঢুকেছে। এ ছাড়া তার এলাকার জনগুরুত্বপূর্ণ তিন থেকে চারটি সড়ক ভেঙে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এখনো উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, আমার এলকায় ২০ টি গ্রামের মানুষ পানি বন্দি হয়ছে। ১০ হাজার মানুষ গত রাত থেকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। দিনমজুরসহ কর্মজীবী সাধারণ মানুষের চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, বিভিন্ন গ্রামে পানিবন্দি রয়েছে মানুষ। ভূমিধসের ঝুঁকিতে রয়েছে পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারীরা। বিভিন্ন রাস্তা ডুবে গিয়ে চলাচলে ভোগান্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, পানবন্দি পরিবারগুলোর খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের দেখভালের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। উখিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে এবং পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে ও নিম্নাঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসরত বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।