গ্লোবাল টিভি ছবি
নেজাম উদ্দিন রানা, রাউজান (চট্টগ্রাম): সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে প্রতীমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চট্টগ্রামের রাউজানের প্রতীমা শিল্পীরা।
আগামী ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। রাউজানের প্রতীমার কারিগরদের কর্মযজ্ঞে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। উপজেলার বিভিন্নস্থানের কারিকালয়ে সকাল থেকে গভীর রাত অবধি চলছে প্রতীমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কর্মব্যস্ততা। দক্ষ প্রতীমা শিল্পীদের নিপুণ হাতের জাদুকরী ছোঁয়ায় প্রতিটি প্রতিমায় ফুটে উঠছে জীবন্ত অবয়ব।
দীর্ঘ সময় ধরে এই পেশায় আঁকড়ে থাকা অনিল পাল, নান্টু পালসহ বেশ কয়েকজন প্রতীমা শিল্পী জানান, চলতি পূজার মৌসুমে প্রতীমা তৈরীর অর্ডার অন্যন্য বারের চাইতে কিছুটা কমেছে। তারপরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্ডার নেওয়া প্রতিমাগুলো ডেলিভারি দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা।
গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার সবচেয়ে বড় প্রতীমা তৈরির কারখানা নোয়াপাড়ার পল্লী মঙ্গল সমিতির মাঠের অনিল পাল শিল্পালয়,
উপজেলা সদরের ফকিরহাট বাজারের থানা রোডের অপরূপা কারিকালয়, জলিলনগর, শরতের দোকানসহ আরো বেশ কিছুস্থানে কারিকালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিমা তৈরী করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। ডিজাইন আর আকারভেদে একেকটি প্রতিমার অর্ডার নিয়েছেন ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৭০/৮০ হাজার টাকায়।পূজা কমিটির চাহিদানুযায়ী নানা ডিজাইনের প্রতিমা তৈরি করতে দম ফেলার ফুরসতই যেন পাচ্ছেনা প্রতীমা শিল্পীরা।
প্রতীমা তৈরীর খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় সংসারের কাজ সামলানোর পাশাপাশি স্বামী আর সন্তানদের সহযোগিতা করতে কাজ করছেন নারীরাও।
প্রতীমা শিল্পী নান্টু পালের স্ত্রী অঞ্জু রানী পাল বলেন, বর্তমানে সবকিছুর খরচ বেড়েছে। এখন আর আগের সুদিন নেই। তাই বাড়তি খরচের কিছুটা লাগাম টানতে সংসারের কাজকর্ম সেরে অবসর সময়টুকুকে স্বামী আর সন্তানকে সহযোগিতা করি।
শিল্পী কমল পাল বলেন, এই পেশার সাথে একটা নেশা জড়িয়ে গেছে। অনেকেই আর্থিক টানাপোড়েনে এই পেশা ত্যাগ করলেও আমরা দুঃখ কষ্টের মাঝেও পেশাটা আঁকড়ে ধরে আছি, যদি সুদিন ফিরে আসে এই আশায়।
রাউজান পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে ৫৩টি পূজা মণ্ডপসহ চলতি বছর উপজেলায় ২২৯টি পূজা মণ্ডপে ঢাক, ঢোল বাজিয়ে মা দুর্গাকে বরণ করতে অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন ভক্তরা। ১৩ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী বর্ণিল পূজা উৎসব।