ঢাকা, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মনোহরদীতে আনিকা হত্যা রহস্যের জট খুলছে

মনোহরদীতে আনিকা হত্যা রহস্যের জট খুলছে

গ্লোবাল টিভি ছবি

মো.শফিকুল ইসলাম মতি, নরসিংদী: নরসিংদীর মনোহরদী সরকারি কলেজের পেছনে খালার বাড়িতে আনিকা (১৫) নামের এক স্কুলছাত্রীকে ঘরের ভেতর ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সোমবার বিকেলে এ হত্যাকান্ড ঘটে। এসময় গুরুতর আহত হন তার খালা পাপিয়া আক্তার (৪৯)। 

নিহত আনিকা স্থানীয় কৃষ্ণপুর ভোকেশনাল স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী এবং পার্শ্ববর্তী বেলাব উপজেলার পোড়াদিয়া গ্রামের শাহজাদা নূর আলমের মেয়ে। গুরুতর আহত পাপিয়া আক্তার মৃত আব্দুস ছাত্তার মাস্টারের স্ত্রী। আহত খালা পাপিয়া আক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

এরই মধ্যে হত্যার রহস্যের জট খুলতে শুরু করছে। নিহতের পরিবারের সদস্যরা গণমাধ্যমকে এড়িয়ে গেলেও ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাপিয়ার মেয়ে অর্থাৎ নিহত আনিকার খালাতো বোন কলেজ পড়ুয়া অর্পার সঙ্গে পরিচয় হয় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শাহজাহান কিবরিয়ার ছেলে সৌদিপ্রবাসী শাহরিয়ার ফারদিনের। অর্পাকে ফারদিনের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার জন্য অনেকদিন ধরে চাপ দেয়া হচ্ছিলো। কিন্তু অর্পার মা (পাপিয়া) ঐ বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না। 

সোমবার কুলাউড়া থেকে মনোহরদী আসেন ফারদিন। পরে তিনি অর্পার বাসায় আসেন। তখন অর্পা বিশ্ববিদ্যালয় কোচিং ক্লাস করতে নরসিংদী ছিলেন। বাসায় ছিলেন তার মা ও খালাতো বোন আনিকা। দুপুরে রান্না করে ফারদিনকে খাওয়ান পাপিয়া। পরে অর্পাকে বিয়ে দেয়া নিয়ে মা (পাপিয়ার) সঙ্গে কথাবার্তা বলার সময় হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে পড়েন ফারদিন। এক পর্যায়ে ফারদিন তার ব্যাগে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে পাপিয়াকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এসময় আহত পাপিয়া চিৎকার করলে পাশের কক্ষে থাকা আনিকা তার খালাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। এ সময় ঘাতকের হাত থেকেও রক্ষা পাননি আনিকা। তাকেও কোপাতে থাকেন ফারদিন। চাপাতির কোপে গলা কেটে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই আনিকার মৃত্যু হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান ঘাতক ফারদিন। 

পরে পাপিয়া বাসা থেকে বের হয়ে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় পাপিয়াকে উদ্ধার করে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে নিহত আনিকার মা নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। 

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের বাবা শাহাজাদা নূর আলম বাদী হয়ে শাহরিয়ার শাহজাহান ফারদিনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে মনোহরদী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।