গ্লোবাল টিভি ছবি
সোহেল রানা, নীলফামারী: নীলফামারীতে বাস্তুভিটার জন্য সাত শতাংশ জমি ক্রয় করে দেয়ার কথা বলে হতদরিদ্রের টাকা আত্নসাতের ঘটনায় ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাজাহান আলীসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী মনজু বেগম। এছাড়াও ন্যায়বিচার পাওয়ার লক্ষ্যে নীলফামারী সেনা ক্যাম্পেও একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
ঘটনাটি সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া এলাকায় ঘটেছে। ভুক্তভোগী মনজু বেগম ওই এলাকার দিনমজুর দুলাল হোসেনের স্ত্রী।
অভিযুক্তরা হলেন- একই এলাকার মৃত আবুল কাশেম সরকারের পুত্র শাহাজাহান আলী (৫৫), তার দুই পুত্র সবুজ (৩০) ও সাজু (২৬) এবং মৃত চাপা মামুদের পুত্র জমি দাতা আব্দুল রহিম (৪৫) ও আব্দুর করিম (৪৬)।
ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী জানায়, গত তিন বছর আগে আব্দুল রহিম ও আব্দুল করিম তফশীল বর্ণিত বিএস রেকর্ড মূলে ৬৮৯ দাগের ১৬ শতাংশ জমি বিক্রির প্রস্তাব দেন শাহাজাহান আলী ও মনজু বেগমের কাছে। মনজু বেগম সাত শতাংশ আর শাহাজাহান নয় শতাংশ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন। সেই মোতাবেক মনজু বেগম প্রথম ধাপে শাহাজাহান আলীর উপস্থিতিতে আশি হাজার টাকা প্রদান করেন মালিকের কাছে।
এরপর জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়ার কথা বলে মোট চার লক্ষ পনের হাজার টাকা প্রদান করেন তারা। এরপর একাধিকবার জমি রেজিস্ট্রি করার কথা বলায় ওই পরিবারের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন অভিযুক্ত শাহাজাহান। জমিদাতাকে ফুসলিয়ে পুরো ১৬ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে নেন তিনি। এনিয়ে বিভিন্ন বার সালিশও করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে অভিযুক্ত শাহাজাহান এবং আব্দুল করিম পলাতক রয়েছেন। শাহাজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রী হাসেনা বেগম বলেন, আমার স্বামী বাসায় নেই। জমি ক্রয়ের জন্য মনজু আমার স্বামীকে টাকা দিয়েছিলো কিন্তু আমরা জমি দেবো না।
৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য সাইদুল ইসলাম বলেন, মনজু বেগম কষ্ট করে টাকা জমিয়ে এবং ঋণ নিয়ে শাহাজাহানকে টাকা দিয়েছে তা আমরা জানি। জমির সাত শতাংশ মনজুর দখলে আছে প্রায় তিন বছর ধরে। কিন্তু রেজিস্ট্রি করে দেয় না। কিছু বললেই দলীয় পাওয়ার দেখায়। মনজুকে তার পাওনা সাত শতাংশ জমি ফেরতসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি আমাদের।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এম.আর সাঈদ বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।