ফাইল ছবি
দিদারুল আলম জিসান, উখিয়া টেকনাফ (কক্সবাজার) : আজ বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করার কথা থাকলেও যাত্রী সংকটের কারণে তা হচ্ছে না। চলতি মৌসুমে প্রশাসনের অনুমতি পাওয়া জাহাজ কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হবে।
চলাচলের অনুমতি পাওয়া জাহাজ কেয়ারি সিন্দাবাদের ব্যবস্থাপক নুর মোহাম্মদ বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়ারছড়াস্থ আইডব্লিউটিএ জেটি ঘাট দিয়ে জাহাজ ছাড়ার অনুমতি ছিল। কিন্তু যাত্রী সংকটের কারণে জাহাজ ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না। কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৩৫০ জন। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেন্টমার্টিন যেতে ইচ্ছুক যাত্রীর টিকেট বুকিং শতজনেও গড়ায়নি। এতে যাত্রী সংকটের কারণে কাল বৃহস্পতিবার জাহাজটি না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মূলত নভেম্বর মাসে রাত্রিযাপনের নিষেধাজ্ঞার কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে পর্যটকদের অনীহা বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যেহেতু ডিসেম্বর মাসে সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপনে নিষেধাজ্ঞা নেই, তাই আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে দ্বীপে ভ্রমণেচ্ছুক পর্যটকের সংকট থাকবে না। এ কারণে ডিসেম্বরের শুরু থেকে জাহাজ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত ১৯ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সেন্টমার্টিন দ্বীপে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ এবং সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটিরে আহবায়ক করা হয় কক্সবাজার সদর ও টেকনাফের ইউএনওকে।
মঙ্গলবার বিকালে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে কমিটির প্রথম বৈঠক হয়। এতে কমিটির সদস্যরাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট সংগঠনের প্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে উপস্থিত সকলে মন্ত্রণালয়ের সার্বিক নির্দেশনা মেনে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট হিসেবে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ আইডব্লিউটিএ জেটি ঘাট ব্যবহারে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও জাহাজ মালিকদের সংগঠন স্কোয়াব তা নিয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেছে।
এ নিয়ে কক্সবাজার সদরের ইউএনও নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, নভেম্বর মাসে দ্বীপে পর্যটক গেলেও দিনে ফিরে আসতে হবে। রত্রিযাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপন করা যাবে। পর্যটকের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি হবে না। দ্বীপে রাতে আলো জ্বালানো যাবেনা, শব্দ দূষণ সৃষ্টি করা যাবে না। বার বি কিউ পার্টি করা যাবে না।
এ ব্যাপারে ট্যুর অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক)- এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন বিশ্বাস তুষার বলেন, মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত কমিটি জাহাজ ছাড়ার যে স্থানটি নির্ধারণ করেছে, তাতে ভাটার সময় ডুবোচর জেগে ওঠায় চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে। বিগত মৌসুমগুলোতে ওই ঘাট দিয়ে জাহাজ চলাচল করতে গিয়ে ডুবোচরে আটকে যাওয়া পর্যটকদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এমনকি জাহাজটি বাঁকখালী নদীর মোহনায় ডুবোচরে আটকে যাওয়ায় পর্যটকদের পুরো রাত সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় কাটাতে হয়েছে।