ঢাকা, শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ | ৫ মাঘ ১৪৩১ | ১৭ রজব ১৪৪৬

বিজয়ের মাস : ৫ ডিসেম্বর ১৯৭১

বিজয়ের মাস : ৫ ডিসেম্বর ১৯৭১

ফাইল ছবি

৫ ডিসেম্বর, ১৯৭১। ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয় বাঙালিরা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল দখলমুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা ঢাকার দিকে আসতে থাকেন। কামান-গোলাসহ মারণাস্ত্রের সামনে যার যা কিছু ছিল তাই নিয়ে বাংলার মুক্তিসেনাদের সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয়। 

ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বাঙালির সম্মুখযুদ্ধে একের পর এক পরাজয়ে পায়ের তলা থেকে মাটিও সরে যেতে থাকে পাক হানাদারদের। তার ওপর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর শাণিত আক্রমণে পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা। পাকিস্তান পরাজয়ের বিষয়টি বুঝতে পেরে নতুন কূটকৌশলে কূটনৈতিক যুদ্ধ শুরু করে। 

পাকিস্তানের সামরিক জান্তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করে। পাকিস্তানকে রক্ষায় উদ্যোগ নেয় যুক্তরাষ্ট্র। একাত্তরের এই দিনে পূর্ব পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পেশ করে। এ প্রস্তাবের পাশাপাশি ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত থেকে সৈন্য প্রত্যাহারসহ যুক্তরাষ্ট্র আরও কিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করে। 

নিরাপত্তা পরিষদের ১৪ সদস্যের মধ্যে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু  সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পোল্যান্ড এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে, তবে ১০টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে মত দেয়। ব্রিটেন ও ফ্রান্স ভোটদানে বিরত থাকে। এমনই পরিস্থিতিতে প্রস্তাবটি যাতে পাস হতে না পারে, সেজন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রস্তাবের বিপক্ষে ভেটো প্রদান করায় প্রস্তাবের মৃত্যু ঘটে। 

অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তানের গবর্নর ভারতীয় হামলা প্রতিরোধে প্রতিরক্ষা তহবিলে মুক্তহস্তে সবাইকে দান করার আহ্বান জানান। পাকিস্তানি সেনাপ্রধান অন্য এক ঘোষণায় অবসরপ্রাপ্ত ৫৫ বছরের কম বয়সী মেজর পর্যন্ত সব সৈনিককে নিকটস্থ রিক্রুটিং অফিসে হাজির হওয়ার জন্য আবার নির্দেশ দেন। বাঙালির জন্মভূমি আদায়ের লড়াইকে আড়াল করতে পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হয়েছে বলে বেতারে ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান।

কিন্তু মাতৃভূমিকে হানাদারমুক্ত করতে তারা মরণপণ লড়াই চালিয়ে যায়।