ঢাকা, শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ | ৫ মাঘ ১৪৩১ | ১৭ রজব ১৪৪৬

শিবচর নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের মুখোশ উন্মোচন!

শিবচর নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের মুখোশ উন্মোচন!

গ্লোবাল টিভি ছবি

এমএ কাইয়ুম, মাদারীপুর: গেলো ২৭ নভেম্বর  ভারতীয়  ‘R.বাংলা’ মিডিয়ায় প্রচারিত বাংলাদেশের শিবচরে ‘জোর করে বন্ধ করে দেয়া হলো ইসকনের শাখা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়, সেই সংবাদটি  ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। এতে বাংলাদেশের হিন্দু- মুসলিমদের মাঝে দাঙ্গা বাধানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে।

সংবাদটি প্রচারের পর থেকে ঘটনার বস্তুনিষ্ঠতা ও সত্যতা যাচাইয়ের কাজে মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান করে গ্লোবাল টেলিভিশন। 

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার, বিতর্কিত ইসকন নেতা চিন্ময় দাস ব্রম্মচারীর জামিন না মঞ্জুরকে কেন্দ্র করে গেলো ২৬ নভেম্বর চট্রগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এতে সারা দেশের মানুষ ইসকনের কর্মকান্ডের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল বের করে। তারই অংশ হিসেবে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায়ও একটা  বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরদিন ২৭ নভেম্বর সকাল ১১টার দিকে  শিবচরের  ইসকন অফিসের কাছে উৎসুক জনতা ভীড় করলে বাড়ির মালিক বিনয় মালোকে ইসকন সদস্যদের তাড়িয়ে দেয়ার জন্য বলেন। এ খবর পেয়ে বাজারের জুতার দোকানী জগবন্ধু নামের সনাতন ধর্মাবলম্বী পূজা উৎযাপন কমিটির একজন সদস্য থানায় ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে ফোন দিলে দ্রুত তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। ওই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুরোধে উৎসুক জনতা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

পরে নিরাপত্তার স্বার্থে  জগবন্ধুর মাধ্যমে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় ইসকনের তিনজন সদস্যকে তাদের ইচ্ছায় কালো রংয়ের একটা প্রাইভেটকারে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়া হয়। তাই ‘সেনাবাহিনী এসে গাড়িতে তুলে নিলো  ইসকন ভক্তদের’এই অভিযোগ অসত্য।
সেনাবাহিনীর ২টি গাড়ি কেবল টহলরত ছিলো, অবস্থান  করেনি। 

জানা যায়, ইসকন অফিসের সাইনবোর্ডটি  খুলে ফেলেন বাড়ির  মালিক বিনয় মালোর ছেলে জনি মালো। জনি বলেন,যেহেতু  তারা চলে যাবেন, তাই সাইনবোর্ডটি  খুলে ফেলেছি। অপরদিকে বিনয় মালো বলেন, বাড়িতে কেউ আসেনি, কোন ভাঙচুরও হয়নি। আমার ছেলেকে দিয়ে সবার সামনে সাইনবোর্ডটি খুলে ফেলেছি।

শিবচর উপজেলা পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি প্রশান্ত কুমার রাহা বলেন, ইসকনের অফিসে বা তাদের সাথে কোনোরকমের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, এমনকি জাতিগত বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়নি।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকতার হোসেন বলেন, ওইদিন (২৭ নভেম্বর) সেখানে কোনোরকমের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এরকম কোনো সম্ভাবনা আছে বলেও আমাদের কাছে তথ্য নেই।