‘ভূমির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও কৃষিভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। চূড়ান্ত করা খসড়াটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। ভেটিংয়ের পর খসড়াটি উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চারজন উপদেষ্টার উপস্থিতিতে মতবিনিময় সভায় খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়। ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, আবাসন ও উন্নয়নমূলক নানা কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিনিয়তই কমছে কৃষি জমি। কৃষি জমি সুরক্ষায় একটি আইন করার প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন আগে শুরু হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। অবশেষে এ বিষয়ে একটি অধ্যাদেশ করার জন্য জোরালো উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর 'ভূমি ব্যবহার ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫' এর খসড়া করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। খসড়ায় কৃষি জমির সুরক্ষাকে জোর দেওয়া হয়েছে। কৃষি জমি রক্ষায় কঠিন বিধি-বিধান যুক্ত হচ্ছে। কৃষি জমিতে অকৃষি কার্যক্রম করলে পড়তে হবে কঠোর শাস্তির মুখে।
ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, কৃষিজমি আমাদের অস্তিত্বের ভিত্তি। কৃষিভূমি সুরক্ষা এখন সময়ের দাবি। এই জমি হারালে আমরা হারাবো খাদ্যনিরাপত্তা, পরিবেশের ভারসাম্য এবং কৃষিভিত্তিক সংস্কৃতি। তাই কৃষিজমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এখন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় প্রয়োজন। এ প্রেক্ষাপটে কৃষিভূমি সুরক্ষা এখন সময়ের একান্ত দাবি। দেশের অধিকাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, অব্যবস্থাপনা, নগরায়ন ও শিল্পায়নের চাপে কৃষিজমি ভয়াবহভাবে হ্রাস পাচ্ছে। প্রতিদিন অজস্র একর উর্বর জমি আবাসিক, বাণিজ্যিক কিংবা শিল্প ব্যবহারের জন্য নষ্ট হচ্ছে।
কৃষিজমি কমে গেলে খাদ্য উৎপাদনও কমে যায় উল্লেখ করে ভূমি উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে কৃষিজমি আইনগতভাবে সংরক্ষণ করা জরুরি। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, গ্রামীণ অর্থনীতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কৃষিজমি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রেক্ষাপটে কৃষিভূমি সুরক্ষার জন্য আইন প্রণয়ন একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কৃষি জমি রক্ষা অধ্যাদেশ কার্যকর হওয়ার দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকার কৃষিভূমি সুরক্ষা ও জোনিভিত্তিক ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে ভূমির বিদ্যমান ব্যবহার, প্রকৃতিক বৈশিষ্ট্য ও ভূমিরূপ যথাযথভাবে পরীক্ষা করে, অত্যাধুনিক ডিজিটালাইজড প্রযুক্তির মাধ্যমে ধারণকৃত প্রতিচ্ছবি যথাযথ বিশ্লেষণ করে এবং সরেজমিন পরিদর্শন করে মৌজা, দাগ বা অন্য কোনো চিহ্ন বা সীমারেখা দ্বারা ‘ভূমি জোনিং ম্যাপ’ প্রণয়ন করা হবে।