ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জানিয়েছেন, ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় জনদুর্ভোগ লাঘবে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। উন্নয়ন অবশ্যই প্রয়োজন, কিন্তু তা যেন মানুষের জীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি না করে। আর এটাই একটি সরকারের মৌলিক নীতি।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ভূমি বরাদ্দ কমিটি’র ১৫২ তম সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, সেতু বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব, সড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
ভূমি উপদেষ্টা বলেন, ভূমি রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সড়ক, সেতু, বাঁধ, স্লুইজগেট, রেললাইন, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ প্রকল্প ও শিল্পায়নসহ যেকোনো বড় উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ অপরিহার্য। তাই এই প্রক্রিয়ায় জনদুর্ভোগ লাঘবের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজটের কথা তুলে ধরে বলেন, জনগণ অতিদ্রুত এর সমাধান দেখতে চায় এবং তিনি নিজে বিষয়টি মনিটর করবেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ভূমি বরাদ্দের ক্ষেত্রে পুকুরের শ্রেণী পরিবর্তন না করার বিষয়েও জোর তাগিদ দেন।
সভায় বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা জেলার রুপগঞ্জে ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্প’-এর জন্য ১ দশমিক ৮৭ একর, নারায়ণগঞ্জে একই প্রকল্পের জন্য ৪.০৫ একর, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আরবান ডেভেলপমেন্ট সিটি গর্ভার্নেন্স প্রকল্পের জন্য ৩৬ দশমিক ৯৯ একর এবং গাজীপুর জেলার দক্ষিণখান ও ধীরামে ‘ধীরাম আইসিডি’ নির্মাণের জন্য ১৬৮ দশমিক ৫০৪ একর ভূমি অধিগ্রহণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নরসিংদীতে ‘ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার এন্ড ম্যানেজমেন্ট (সিএমএডডব্লিউএম)’ প্রকল্পের আওতায় দু’টি স্লুইচগেট নির্মাণের জন্য ০.২৪৫৮ একর ভূমি অধিগ্রহণ অনুমোদন করা হয়েছে। এছাড়া, জেলা ভূমি বরাদ্দ কমিটির সুপারিশ করা ৫০ বিঘার বেশি ভূমি অধিগ্রহণ প্রস্তাবের মধ্যে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ‘চর ডেভেলপমেন্ট এন্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট ব্রিজিং’, সি-ডাইক (রিটার্ড), বেড়ী বাঁধ, রেগুলেটর নির্মাণ ও রেগুলেটরের ডাইভারশন চ্যানেল খনন কাজের জন্য বিভিন্ন মৌজায় ৯৪ দশমিক ১৬ একর, ২০ দশমিক ২০ একর ও ৮৪ দশমিক ৪২ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়।
খুলনার কয়রা উপজেলার ‘পোল্ডার নং ১৪/১ পূর্নবাসন’ প্রকল্পের জন্য ২ দশমিক ২৫ একর, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের জন্য ১১.০৭১৩ একর, এই মহাসড়কের অন্য এক প্রকল্পের জন্য ১২ দশমিক ৯৫ একর, ৮ দশমিক ৬৮ একর, ১৪ দশমিক ৯৯ একর, ১০.০৩৮৪ একর, ০.৯৬৪৩ একর, ০.২৫৬৫ একর, ৭.৪৯৮০ একর, ১০.৪৭২৮ একর এবং ১১.৫২৬৮ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়। এছাড়াও ‘মাগুরা-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কের এক প্রকল্পের জন্য ৪৬ দশমিক ৪৬ একর ভূমি অধিগ্রহণের চূড়ান্ত অনুমোদন করে এই কমিটি।