ঢাকা, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৭ পৌষ ১৪৩২ | ১০ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম

সরে দাঁড়ানোই মাদুরোর জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে: ট্রাম্প

সরে দাঁড়ানোই মাদুরোর জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আমি মনে করি, এটা করা তার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তিনি যদি কিছু করতে চানযদি তিনি কঠোর অবস্থান নেন, তবে সেটাই হবে তাঁর শেষবারের মতো কঠোর অবস্থান নেওয়া।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) মাদুরোকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতেই কি ওয়াশিংটন এমন হুমকি দিচ্ছে, ফ্লোরিডায় নিজের বাড়িতে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন তেলসম্পদসমৃদ্ধ দেশটির ওপর চাপ বৃদ্ধি করতে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী ভেনেজুয়েলার ওপর অবরোধ জোরদার করছে। তবে ভেনেজুয়েলার প্রধান মিত্র রাশিয়া মাদুরোর সরকারের প্রতি তাদের ‘পূর্ণ সমর্থন’ ব্যক্ত করেছে। ওয়াশিংটন কারাকাসের বিরুদ্ধে সামরিক তৎপরতা ও হুমকি আরও জোরদার করেছে। ১২ বছর ধরে ভেনেজুয়েলার ক্ষমতায় আছেন মাদুরো।

মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্পের এই বক্তব্যের জবাব দেন মাদুরো। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ওই ভাষণে তিনি বলেন, ট্রাম্পের জন্য কারাকাসকে হুমকি দেওয়ার বদলে নিজের দেশের সমস্যাগুলোতে মনোযোগ দেওয়া অধিক উত্তম হবে। নিজের দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়গুলো নিয়ে থাকাই তার জন্য ভালো হবে এবং যদি নিজের দেশের কাজকর্ম ঠিকভাবে দেখাশোনা করেন, তবে বিশ্বে তার অবস্থান আরও ভালো হবে।

ওয়াশিংটন যেমন একদিকে কারাকাসের ওপর চাপ বৃদ্ধি করছে, অন্যদিকে মস্কো পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। টেলিফোনে এক আলাপে মিত্র দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মাদক দমনের নামে নৌযানগুলোর ওপর হামলা এবং দুটি তেল ট্যাংকার জব্দ করাসহ মার্কিন কার্যক্রমের কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান জিলের মধ্যে ফোনে আলাপের বিষয়টি জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, মন্ত্রীরা ক্যারিবীয় সাগরে ওয়াশিংটনের কার্যক্রম জোরদার করা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যা ওই অঞ্চলের জন্য গুরুতর পরিণতি বয়ে আনতে পারে এবং আন্তর্জাতিক নৌপরিবহন হুমকির মুখে পড়তে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভেনেজুয়েলার নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি রাশিয়া পূর্ণ সমর্থন ও ঐক্য পুনর্ব্যক্ত করেছে।

মাদক পাচার করছে অভিযোগ তুলে গত সেপ্টেম্বর থেকে ক্যারিবীয় সাগর ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে বেশ কয়েকটি নৌযানের ওপর হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। কিন্তু মার্কিন বাহিনী নিজেদের এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এসব হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন জেলে রয়েছেন বলে দাবি করেছে তাদের পরিবার ও ভেনেজুয়েলা সরকার।

১৬ ডিসেম্বর ভেনেজুয়েলায় সব ধরনের তেলের ট্যাংকার যাতায়াত নিষিদ্ধ করেন এবং নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যাতায়াত করা ট্যাংকারকে অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। তার দাবি, নিকোলা মাদুরোর নেতৃত্বাধীন কারাকাস সরকার তেল বিক্রি থেকে আয় করে সেই অর্থ থেকে মাদক সন্ত্রাস, মানবপাচার, হত্যা ও অপহরণকে অর্থায়ন করছে। ভেনেজুয়েলা আমাদের সব তেল নিয়ে যাচ্ছে। আমরা তা ফেরত চাই।

অন্যদিকে, কারাকাসের ভয়, ওয়াশিংটন ভেনেজুয়েলায় সরকার পরিবর্তন করতে চাইছে। দেশটি ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতার’ অভিযোগও এনেছে।