চলতি বছরের নয় মাসে সমুদ্রপথে ইতালিতে পাড়ি জমানো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রকাশিত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে মোট ১৫ হাজার ৪৭৬ জন বাংলাদেশি সমুদ্রপথে ইতালির উপকূলে পৌঁছেছেন। চলতি বছর ইতালিতে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের এই সংখ্যা অন্য যে কোনো দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশভিত্তিক হিসাবে আগতদের ৩০ শতাংশই ছিলেন বাংলাদেশি।
সরকারের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের প্রথম নয় মাসের তুলনায় ২০২৫ সালে বাংলাদেশিদের আগমন প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। ২০২৪ সালে এই সময়ে আট হাজার ৫২৬ জন বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে এসেছিলেন। এ বছর তা বেড়ে ১৫ হাজার ৪৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশিদের পর সর্বাধিক সংখ্যক অভিবাসী এসেছে ইরিত্রিয়া ও মিশর থেকে। পাকিস্তান, সুদান, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া ও টিউনিশিয়া থেকেও কয়েক হাজার মানুষ এ সময় ইতালিতে পাড়ি জমিয়েছেন। অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে ইরান, সিরিয়া, গিনি, আলজেরিয়া, নাইজেরিয়া, মালি ও আফগানিস্তান। আরও কিছু অভিবাসীর পরিচয় যাচাইয়ের কাজ এখনো চলমান।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৫ সালের মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়টিই ছিল অভিবাসনের প্রধান মৌসুম। মে মাসে সাত হাজার ১৭৮ জন, জুনে সাত হাজার ৮৯ জন, জুলাইয়ে ছয় হাজার ৪৮৭ জন, আগস্টে ছয় হাজার ১৪৬ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ আট হাজার ৩১৫ জন অভিবাসী ইতালিতে পৌঁছান। অক্টোবরের প্রথম দিক পর্যন্ত আগমন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক একক অভিবাসীর সংখ্যাও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট নয় হাজার ১৫৬ জন শিশু ইটালিতে পৌঁছেছে, যা গত বছরের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও ২০২৩ সালের উল্লিখিত সময়ের তুলনায় অনেক কম। ২০২৪ সালের এই সময়ে আট হাজার ৭৫২ শিশু এবং ২০২৩ সালে ১৮ হাজার ৮২০ শিশু ইতালিতে পৌঁছেছিল। ইউরোপীয় সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আরোপ আরও কঠোর হলেও বাংলাদেশিদের আগমনের ক্ষেত্রে তার প্রভাব তেমন পড়েনি। ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।