 
														বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ । ছবি : সংগৃহীত
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আমরা চাই, অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় নিরপেক্ষভাবে আচরণ করুক। যাতে জাতি আশ্বস্ত হতে পারে এবং ঐক্য বজায় থাকে। কিন্তু ঐকমত্য কমিশন ও সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ আমাদের হতাশ করেছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এবং সরকারের কিছু পদক্ষেপে আমরা আজ গভীর হতাশা প্রকাশ করছি। এগুলোর মাধ্যমে জাতিতে ঐক্যের বদলে বিভাজন তৈরি হচ্ছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য ছিল ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু তারা এখন এমন কিছু প্রস্তাব দিয়েছে, যা জাতিকে বিভক্ত করবে, অনৈক্য সৃষ্টি করবে। এর ভিত্তিতে কোনো ঐকমত্য হবে না। তারা কী অর্জন করতে চায়, আমরা জানি না।
ধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বনানীর লেকশোরে হোটেলে আয়োজিত ‘ফ্রম রুল বাই পাওয়ার টু রুল অব ল: ট্রানজিশন টু অ্যা ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারকে সুপারিশ দেওয়া করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা কিছু সত্য আবিষ্কার করতে পেরেছেন। এত দিন তাঁরা মনে করতেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু তারা যে সুপারিশ দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, এর মধ্যে একজন দস্তখতকারী প্রধান উপদেষ্টাও আছেন, যিনি কমিশনের সভাপতি। ফলে এটি সরকারের পক্ষ থেকেও একধরনের অনুমোদন বা সমর্থন।
সুপারিশে কিছু দলের প্রস্তাব ও ঐকমত্য কমিশনের চিন্তা-ভাবনা জাতির ওপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করেছেন বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে জুলাই সনদের পূর্ণ প্রতিফলন নেই। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় যে সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, কমিশনের দেওয়া সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশে তার হুবহু প্রতিফলন নেই। রেফারিকে তাঁরা কখনো গোল দিতে দেখেননি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু-তিনটি রাজনৈতিক দল একই পক্ষ। আমি বিপক্ষেই খেলছিলাম মনে হয়। সেই হিসেবে জাতির পক্ষের দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যে দলিলটি প্রকাশিত হয়েছে, সেটি ৯৪ পৃষ্ঠার। সেখানে ঐকমত্য কমিশনে যেভাবে ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়েছিল, কিংবা যে দলিলটি ১৭ অক্টোবর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেই দলিলটি এখানে হুবহু নেই। শুধু আছে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব, রাজনৈতিক দলগুলোর সুপারিশ। কিন্তু কীভাবে ঐকমত্যে পৌঁছানো হলো, নোট অব ডিসেন্ট কোথায় আছে, তার কোনো উল্লেখ নেই। সংবিধান সংশোধনের ৪৮টি দফা প্রস্তাব তফসিল আকারে সংযুক্ত করে বলা হয়েছে, এই দফাগুলোর ওপর গণভোট হবে। অথচ এই বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।
আরপিও এবং জোটের প্রতীক নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বা আরপিওতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে জোটভুক্ত কোনো রাজনৈতিক দল চাইলে নিজস্ব প্রতীক বা জোটের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারত। এখন অগণতান্ত্রিকভাবে বলা হয়েছে, জোটভুক্ত হলেও নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। দেখলাম আরেকটি রাজনৈতিক দল সেটাকে সমর্থন করছে। এটা আমরা আশা করি না।