ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম

জুলাই গণঅভ্যুত্থান

ঢাবির ৪০৩ শিক্ষার্থীকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, জানতে নোটিশ

ঢাবির ৪০৩ শিক্ষার্থীকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, জানতে নোটিশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৪০৩ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের নামও রয়েছে।  নোটিশে এই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ৪০৩ শিক্ষার্থীর অধিকাংশই ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদের সই করা এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। রোববার বিবৃতিটি দেওয়া হলেও মঙ্গলবার তা গণমাধ্যমের নজরে আসে। প্রক্টর অফিস থেকে জানানো হয়েছে, নোটিশের সময়সীমা মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর ধরা হবে। অভিযুক্তদের মধ্যে যাদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায় শেষ হয়েছে, তাদের সনদ বাতিলের জন্য আমরা আবেদন করব।

নোটিশে বলা হয়, গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত বেআইনী ও সহিংস ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির অনুসন্ধানে ১২৮ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করা হয়। এরপর গত ২৭ মার্চ সিন্ডিকেট সভায় আলোচনা শেষে এই শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পরে ক্যাম্পাসে সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয় সিন্ডিকেট। ওই কমিটি দ্বিতীয় সভায় আগের ১২৮ জনসহ সব মিলিয়ে ৪০৩ শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতার কথা জানায়। এই ৪০৩ শিক্ষার্থীকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তা সাতদিনের মধ্যে লিখিতভাবে প্রক্টর অফিসে জমা দিতে বলা হয়েছে। তা না করা হলে এই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে একতরফা ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

২০২৪ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অপমানজনক’ মন্তব্যের প্রতিবাদে ১৫ জুলাই দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোটাবিরোধী কতিপয় নেতা যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, এর জবাব দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগ প্রস্তুত।’

দুপুরের দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর দিকে যায়। কিছু শিক্ষার্থী টিএসসিতেই অবস্থান করতে থাকেন। আন্দোলনকারীরা দুটি হল ঘুরে বিজয় একাত্তর হলে গেলে বেলা তিনটার পর সেখানে তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ভিসি চত্বর এলাকায় ছাত্রীদের লাঠি দিয়ে পেটানোর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে বিকালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকাতেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও পুলিশ হামলা চালায়। এসব হামলায় কোটাবিরোধী আন্দোলনের অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এসব ছবিও দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

৪০৩ শিক্ষার্থীর নামের তালিকায় আরও যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জয়দেব নন্দী, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগ সভাপতি সজিবুর রহমান সজিব, স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আযহারুল ইসলাম মামুন, সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুনসহ বিভিন্ন হল শাখার সভাপতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।