ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম

প্রার্থীদের একটাই করণীয়, নিয়মনীতি মেনে নির্বাচন করা: মঈন খান

প্রার্থীদের একটাই করণীয়, নিয়মনীতি মেনে নির্বাচন করা: মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেছেন, রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের একটাই করণীয়। নিয়মনীতি মেনে নির্বাচন করা। আচরণবিধির প্রতিপালন করতেই হবে। এ নিয়ে দ্বিমত নেই। তবে তফসিলের বিষয়ে তিনি কঠোর অবস্থান দেখছেন না।  তফসিলের বাইরে যাওয়ার সুযোগ দেখছি না। আমরা পরামর্শ দিয়েছিলাম। সবকিছুর প্রতিফলন দেখেনি। ধবার (১৯ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সংলাপে বিএনপির পক্ষ থেকে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।

চলমান মতবিনিময় প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানালেও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আচরণবিধি মেনে নির্বাচন করার আহ্বান জানিয়ে মঈন খান বলেন, এই মতবিনিময় নতুন কিছু না। আগের আলোচনাগুলোতে একাধারে আমরা সফল হয়েছি বা ব্যর্থ হয়েছি বলবো না। তবে সংলাপের প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) লোকবলের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ইসির নিজস্ব জনবল থেকে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

নিয়মনীতি প্রণয়ন প্রসঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে মঈন খান বলেন, যতই অঙ্গীকারনামা নেওয়া হোক, নিজেদের সংশোধন না করলে তা কোনো কাজে আসবে না। এক্ষেত্রে শাস্তির বিধান স্পষ্ট না। যত নিয়মনীতি তৈরি করা হবে, তত লঙ্ঘনের প্রবণতা বাড়বে। নিয়ম ভঙ্গ করে কেউ গায়ে জোর খাটালে কথা ও কাজের মধ্যে কোনো মিল থাকবে না। স্বাধীনতা মানে যা খুশি তাই করা নয়, স্বাধীনতা কিছু নিয়মকানুনের ভেতরেই থাকে। অঙ্গীকারনামা আপনারা যতই নেন, আমরা যদি আমাদের বিহেভিয়ার নিজেরা কন্ট্রোল না করি, ওই সময় অঙ্গীকারনামা কোনো কাজ হবে না।

বর্তমান যুগে বাকস্বাধীনতার নতুন ক্ষেত্র হিসেবে এআই এবং অপতথ্যের উত্থান নিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান যুগে বাকস্বাধীনতার নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। তবে কথা বলার স্বাধীনতা যেহেতু দেওয়া হয়েছে সেহেতু এর অপব্যবহার হবেই।  দেশ বর্তমানে একটি ক্রান্তিকাল পার করছে এবং এ সময়ে ইসির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসিকে তাদের বিদ্যমান লোকবলের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, সমমনা দলগুলো দেড় দশক ধরে শুধু একটি উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছি। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। ইসি শক্ত অবস্থানে থাকুন। সংবিধানই আপনাদের ক্ষমতা দিয়েছে। নতজানু হওয়ার কোনো কারণ নেই। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তা হলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে। একই সঙ্গে ইসির নিজস্ব লোকবল থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি জানান তিনি। 

তিনি নির্বাচন কমিশনকে নিয়মকানুনের জটিলতা না বাড়িয়ে জিনিসগুলো সহজ রাখতে এবং মানুষকে সুনাগরিক হতে অনুপ্রাণিত করার পরামর্শ দেন। প্রযুক্তিগত দিক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি স্বীকার করেন যে তিনি নিজে প্রযুক্তিবিদ নন। তবে তিনি এআই এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়ানো ভুল তথ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মানুষের বাক-স্বাধীনতা আছে, কিন্তু তা অপব্যবহার করা উচিত নয়। ‘ফ্রিডম ফ্রিডম ইজ নট অ্যাবসলিউট ফ্রিডম’ কোনো স্বাধীনতা এরকম না যে আমি যা কিছু করব সেটাই ফ্রিডম। তিনি এ ব্যাপারে দায়িত্বশীলভাবে কাজ করার কথা বলেন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনের ম্যানপাওয়ার এবং রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের বিষয়ে ড. মঈন খান বলেন, সরকারের কাছ থেকে লোকবল ভাড়া করে আনার বদলে নির্বাচন কমিশনের নিজেদের মধ্য থেকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। রিটার্নিং অফিসার নির্বাচন কমিশনের বাইরে না থাকলে নির্বাচনের গুণগত পরিবর্তন আসবে। তিনি নির্বাচন কমিশনকে শক্ত থাকতে এবং তাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করার আহ্বান জানান।