অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সরকারের বর্তমান প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা, এবং এর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বাজেট এমনভাবে বাস্তবায়ন করা যাতে দক্ষতা ও অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হয়। প্রয়োজনে কিছু সংখ্যা পুনঃসমন্বয় করতে হলেও বাজেটের মৌলিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অপরিবর্তিত থাকবে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির পৃথক দুটি সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, চলতি অর্থবছর অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকার রাজস্ব ও ব্যয় উভয় দিকই পর্যায়ক্রমে পর্যালোচনা করবে। আমরা অর্থবছরের শেষে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-এডিপিতে কতটা সমন্বয় প্রয়োজন এবং গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না করে কোন খাতে ব্যয় সাশ্রয় করা সম্ভব তা মূল্যায়ন করব। সরকার অবকাঠামো, কৃষি, সামাজিক সুরক্ষাসহ প্রধান খাতগুলোতে সরকারি বিনিয়োগ টিকিয়ে রাখতে বদ্ধপরিকর, একই সঙ্গে উদীয়মান আর্থিক চাপগুলোও সতর্কতার সঙ্গে মোকাবিলা করছে।
তিনি আরও জানান, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় একাধিক আর্থিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ দেখা দেওয়ায় সরকার জাতীয় বাজেট ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) কিছুটা কাটছাঁট করার বিষয়টি বিবেচনা করছে। বাজেট ঘোষণার সময় আমরা বাস্তব অবস্থা ও প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ‘বাস্তবসম্মত ও ব্যবহারিক’ প্রক্ষেপণ করেছিলাম। তবে বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার পর বিশেষ করে রাজস্ব আহরণ, প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং সামগ্রিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশে কিছু নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দেয়।’
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এনবিআরের কিছু কার্যক্রমে সাময়িক স্থবিরতা দেখা দেওয়ায় রাজস্ব আদায়ে ব্যাঘাত ঘটেছে, যা সরকারের আর্থিক অবস্থায় প্রভাব ফেলেছে। এনবিআরের নির্দিষ্ট কিছু কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় রাজস্ব প্রবাহে প্রভাব পড়েছে, এ কারণেই আমরা ব্যয় পরিকল্পনা পুনর্মূল্যায়ন করছি। রাজস্ব খাত ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার বাস্তবায়ন কর্মক্ষমতায় বৈষম্য দেখা গেছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাজেট সমন্বয় কোনো বড় ধরনের বা হঠাৎ সিদ্ধান্ত হবে না। আমরা কোনো বড় বা ব্যাপক কাটছাঁটের পরিকল্পনা করছি না। বাজেট ও এডিপির সামগ্রিক আকারে সামান্য পরিবর্তন হতে পারে, তবে মূল কাঠামোতে কোনো মৌলিক পরিবর্তন হবে না। দুটি প্রধান সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচক— অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির প্রক্ষেপণ ইতোমধ্যে হালনাগাদ করা হয়েছে, যাতে পরিবর্তিত বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়।