ছবি : সংগৃহীত
মনুমেন্টালের গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডে উৎসবের আমেজ। ভক্তদের উল্লাস, পরিবারের আবেগঘন উপস্থিতি আর দুইটি অসাধারণ গোল। চওড়া মুখের হাসি নিয়েই বুয়েন্স আয়ার্সের মাঠটিতে এদিন পা রেখেছিলেন মেসি। ওয়ার্ম-আপ এবং জাতীয় সঙ্গীত চলাকালেও সতীর্থদের সঙ্গে তাকে বেশ আবেগী দেখা গেল। খানিক বাদেই দর্শকদের করতালি ও উচ্চশব্দে অভ্যর্থনা দৃশ্যপট বদলে দিয়ে মেসির চোখে আনন্দাশ্রু এনে দেয়।
কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের মনে সবচেয়ে বেশি ঝড় তুলেছে তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বলা সেই তিনটি সরল, অথচ গভীর শব্দ: ‘দেখা যাক’।
৩-০ গোলের এই জয়ে দুইটি গোল করে মেসি নিজের হাতেই যেন এই অসাধারণ অধ্যায়ের শেষে মিশ্র আবেগ নিয়ে মেসি বলেন, ‘এভাবে শেষ করা’ এটাই সবসময় আমার স্বপ্ন ছিল।
ম্যাচকে ঘিরে মেসি নিজেও আবেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এই ম্যাচটা আমার জন্য খুব, খুব বিশেষ। কারণ এটা বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনার মাটিতে আমার শেষ ম্যাচ। জানি না এরপর আর কোনো ম্যাচ খেলা হবে কি না। তাই এবার পরিবারের সবাই থাকবে গ্যালারিতে-স্ত্রী, সন্তান, মা-বাবা, ভাই-বোন। আমরা একসঙ্গে উপভোগ করব। এরপর কী হবে, সেটা সময়ই বলে দেবে।
এছাড়াও মেসি নিশ্চিত করেছেন যে ইকুয়েডরের বিপক্ষে গুয়াকিলে তিনি পরের কোয়ালিফায়ারে খেলবেন না। এর মাধ্যমে তিনি যেন আর্জেন্টিনার মাটিতে তার আইকনিক ফুটবল জীবনের বিদায়ের চিহ্ন এঁকে দিলেন। তবুও ভক্তরা ক্লান্ত বন্ধুর মতো তার ফুটবল জীবনের বিদায় চান, নাকি আরও একবার তাকে বিশ্বমঞ্চে দেখতে চান? সেই প্রশ্নের উত্তর তবে, ‘দেখা যাক’।
২০০৫ সালে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হওয়া মেসি দুই দশকের ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১৯৩ ম্যাচ, করেছেন ১১২ গোল। জাতীয় দলের হয়ে জিতেছেন দুটি কোপা আমেরিকা, একটি বিশ্বকাপ এবং অলিম্পিকের স্বর্ণপদক। ডিয়েগো ম্যারাডোনার পর আর্জেন্টিনার ফুটবলকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া এই কিংবদন্তির জন্য ম্যাচটিকে ঘিরে দেশজুড়ে আবেগের স্রোত বয়ে যাচ্ছে।