ঢাকা, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৭ পৌষ ১৪৩২ | ১০ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম

মরা গাছ কাটার টেন্ডার পেয়ে কাটা হচ্ছে জীবিত গাছ

মরা গাছ কাটার টেন্ডার পেয়ে কাটা হচ্ছে জীবিত গাছ

ছবি : গ্লোবাল টিভি

নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ে মরা ও পোকা খাওয়া গাছ কাটার টেন্ডার পেলেও প্রায় অর্ধ শতবর্ষী জীবিত গাছ কাটা হচ্ছে। খোদ জেলা পরিষদের নজরদারির অভাবে জীবিত গাছে করাত চালিয়েছেন ইজারাদার।

সম্প্রতি জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীগঞ্জ-ভবানীগঞ্জ সড়কের পাশে থাকা জেলা পরিষদের মালিকানাধীন মরা ও পোকা খাওয়া গাছ কাটার জন্য কার্যাদেশ প্রদান করে জেলা পরিষদ। তবে সরেজমিন ওই সড়কে বাস্তবে মিলেছে ভিন্ন চিত্র।

শনিবার দেবীগঞ্জ-ভবানীগঞ্জ সড়কের দুই জায়গায় দশ জন শ্রমিককে দুইটি বৃহদাকার শিমুল গাছের ডাল কাটতে দেখা যায়। শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায় জেলা পরিষদ থেকে জাকিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ১৭ টি গাছ কাটার ইজারা পায়।

ওই এলাকার বাসিন্দা রহমান শেখ জানান, এখানে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ইউক্যালিপটাস গাছ থাকলেও সেগুলো কাটা হচ্ছে না। কিন্তু অর্ধ শতবর্ষী শিমুল আর মেহগনি গাছ কাটা হচ্ছে। এমন বৃহদাকার গাছ পেতে আমাদের আরো ৩০-৪০ বছর অপেক্ষা করতে হবে।

সাফিয়ার নামে স্থানীয় এক ভ্যান চালক বলেন, সড়কের পাশে তেমন মরা গাছ নেই। শুনেছি ১৭ টি গাছ কাটা হবে। মরা গাছ না পেয়ে তাই জিবিত গাছ কাটা হচ্ছে।

জেলা পরিষদের ইস্যু করা এক কার্যাদেশ থেকে জানা যায় মরা ও পোকা খাওয়া গাছ কাটার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে কার্যাদেশে কয়টি গাছ কাটা হবে এই সংক্রান্ত কোন তথ্য উল্লেখ নেই।

জীবিত গাছ কাটার বিষয়ে ইজারাদার জাকিরুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, ১৭ টি গাছ কাটা হবে। কত টাকায় ইজারা নেয়া হয়েছে প্রশ্ন করলে জাকিরুল বলেন, আমার দুই লাখ টাকার উপরে আছে, এখানে শেয়ার আছে অন্য জনের। তবে মোট টাকার কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

কার্যাদেশে স্বাক্ষরকারী সহকারী প্রকৌশলী কে. এম সাব্বিরুল ইনাম বলেন, চেয়ারম্যান স্যার আর নির্বাহী স্যারের সাথে কথা বলেন। আমি শুধু স্বাক্ষর করেছি। এটার ব্যাপারে আমি সিদ্ধান্ত দেইনি, আমি জানি না।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আলীম খান ওয়ারেশী বলেন, জেলা পরিষদের সকল খরচ নিজেদের রাজস্ব থেকে ব্যয় করতে হয়। বিভিন্ন জায়গায় থাকা আমাদের সম্পত্তি থেকে রাজস্ব সংগ্রহ করা হয়। এই জন্য গাছগুলো কাটা হচ্ছে। আমরা নতুন করে গাছ লাগাবো। 

তবে কার্যাদেশে শুধু মরা ও পোকা খাওয়া গাছ কাটার বিষয়টি উল্লেখ আছে জানালে তিনি বলেন, পরিপক্ক গাছের কথাও আছে। যদিও জেলা পরিষদের কার্যাদেশে তা পাওয়া যায় নি।

এমএস